Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের ভূমিকা

খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের ভূমিকা
ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার 
স্বাধীনতা পরবর্তী প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত অবকাঠামো নিয়ে সদ্য ভূমিষ্ঠ বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য কৃষির উন্নয়ন যে অনস্বীকার্য তা বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খুবই ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। তিনি জানতেন কৃষিনির্ভর এই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভীত কৃষির উন্নয়নের মাধ্যমেই রচিত হবে। তাই ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কৃষি খাতের উন্নয়নে সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করেন এবং নানাবিধ যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। সেই ধারাবাহিকতায় তিনি ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করেন যা স্বাধীনতা উত্তরকালে একটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ঘটনা। বঙ্গবন্ধুর এই পদক্ষেপের ফলে কৃষি গবেষণার ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়। দেশের সামগ্রিক কৃষি গবেষণা ও উন্নয়ন কর্মকা-কে অধিকতর গতিশীল, যুগোপযোগী ও কার্যকর করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ       কৃষি গবেষণা কাউন্সিল আইন ১৯৯৬ সালে এবং সর্বশেষ ২০১২ সালে সংশোধনের মাধ্যমে দেশে কৃষি গবেষণা ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমকে আরও সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল জাতীয় কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহের গবেষণা কর্মকা-ের মাঝে সমন্বয় সাধনের কাজ করতে থাকে। 

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল আইন ১৯৯৬ সালে পাসের মাধ্যমে জাতীয় কৃষি গবেষণা সিস্টেম প্রতিষ্ঠা লাভ করে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল বর্তমানে নার্স এর শীর্ষ সংস্থা (অঢ়বী ইড়ফু) হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ প্রাণীসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট, তুলা উন্নয়ন বোর্ড এবং রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা কর্মকা-ের সমন্বয় সাধন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল বর্তমানে একটি দক্ষ, কার্যকরী এবং টেকসই কৃষি গবেষণা সিস্টেম প্রতিষ্ঠার দর্শন নিয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় কৃষির উন্নয়নকল্পে উন্নত জাত ও লাগসই প্রযুক্তি এবং তথ্য উদ্ভাবনের লক্ষ্যে নার্সভুক্ত প্রতিষ্ঠান, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বেসরকারি সংস্থা এবং অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠানসমূহের সংগে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে গবেষণা সক্ষমতা জোরদারকরণে সদা সচেষ্ট রয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল জাতীয় কৃষি গবেষণা সিস্টেমের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান। পরিকল্পনা ও সম্পদের সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে জাতীয় কৃষি গবেষণা সক্ষমতা জোরদারকরণ বিএআরসির দায়িত্ব যা একই ছাতার নিচে দেশের সমগ্র কৃষি গবেষণা সিস্টেমের সমন্বয় সাধনের একটি প্রয়াস। এতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় যেমন:কৃষি, পরিবেশ ও বন, মৎস্য ও প্রাণিস¤পদ, পল্লী উন্নয়ন, শিক্ষা, শিল্প, বাণিজ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইত্যাদির সমন্বিত কার্যক্রম যুক্ত হয়েছে। এ লক্ষ্যে কৃষি গবেষণা কাউন্সিল জাতীয় কৃষি গবেষণা সিস্টেম সুসংহত এবং জোরদারকরণ; পরিকল্পনা, অর্থায়ন এবং প্রতিযোগিতামূলক গবেষণা অনুদান সমন্বয় এবং পরিবীক্ষণ; ক্লায়েন্টভিত্তিক বা চাহিদামাফিক লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন; গবেষণা ফলাফল লিপিবদ্ধকরণ এবং সুবিধাভোগীদের মধ্যে প্রচার করা; গবেষণার সুবিধার্থে প্রশাসনিক ও আর্থিককাঠামো সুসংহতকরণ এবং প্রশাসনিক ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা উন্নতকরণের মাধ্যমে গবেষণা উপযোগী পরিবেশ তৈরি করা ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সবসময় কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির উন্নয়নের উপর জোর দিয়েছিলেন। তাঁর বাণী  ‘কৃষক বাঁচাতে হবে, উৎপাদন বাড়াতে হবে তা না হলে বাংলাদেশ বাঁচতে পারবে না।’ তার দূরদর্শী সিদ্ধান্তে বিজ্ঞানভিত্তিক চাষাবাদ কৌশল প্রবর্তনের মাধ্যমে টেকসই কৃষির যাত্রা সূচিত হয়। কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহ পুনরুজ্জীবিত করার মধ্য দিয়ে কৃষি গবেষণায় মুক্তবুদ্ধি চর্চার অবতারণা হয়। বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার দেশের কৃষির উন্নয়নের উপর ব্যাপক গুরুত্ব আরোপ করে। ফলে কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অর্জিত হয় এর বহিঃপ্রকাশ আজকের বাংলাদেশের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে অন্যান্য সহযোগী কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সমন্বয় সাধন করে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় কাজ করে যাচ্ছে। এক ও দুই ফসলি জমি অঞ্চল বর্তমানে চার ফসলি জমিতে পরিণত করা হয়েছে। খাদ্যশস্য উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান এখন দশম যা সম্ভব হয়েছে কৃষি গবেষণার নিরলস প্রচেষ্টায়। কৃষি গবেষণার গুণগত উন্নয়নের দরুন খাদ্য উৎপাদন ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশ আজ ধান উৎপাদনে ৩য়, সবজি উৎপাদনে ৩য়, আলু উৎপাদনে ৭ম, আম উৎপাদনে ৭ম এবং মাছ উৎপাদনেও সফলতা অর্জন করেছে। যা দেশের মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয় কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক অসংখ্য লাগসই প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ফসলের জাত উদ্ভাবিত হয়েছে যা দেশের সার্বিক কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিসহ দেশের খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণ করছে। সেইসাথে পুষ্টিতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর ধারাবাহিক গবেষণার ফলে ধানসহ বিভিন্ন ফলদ ও শাকসবজির বিভিন্ন মৌসুমে চাষোপযোগী পুষ্টিসমৃদ্ধ জাত বের হয়েছে। কৃষিবিজ্ঞানীদের গবেষণার ফলে বর্তমানে সারা বছর বিভিন্ন শাকসবজি ও ফল-ফলাদির চাষ হচ্ছে যা দেশের সার্বিক পুষ্টি চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে । 

বিএআরসি কৃষি গবেষণায় মানবসম্পদ উন্নয়নে বিপুল অবদান রাখছে। দেশের গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উদীয়মান বিজ্ঞানীদের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা যেমন পিএইচডি, মাস্টার্স ও বিশেষ ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ আয়োজন করে চলেছে। এতে দেশের কৃষি গবেষণার দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষি গবেষণায় ও উন্নয়নে বিএআরসি বিভিন্ন নীতিমালা বা পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন বিষয়ে মতামত দিয়ে চলেছে। জাতীয় কৃষি গবেষণা সিস্টেমের গবেষণা কর্মসূচি পরিবীক্ষণপূর্বক অনুমোদন ও পরামর্শ দিয়ে থাকে। জাতীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন এবং সমন্বয় সাধন করছে বিএআরসি। কৃষি মন্ত্রণালয় স¤পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বিভিন্ন প্রশ্নোত্তর নিয়মিত বিএআরসি থেকে দেয়া হয়। কৃষি গবেষণা লব্ধ ফলাফল বা প্রযুক্তি সম্প্রসারণের কর্মকা- বিএআরসিতে চলমান রয়েছে এবং কীটনাশক, সার, বীজ ইত্যাদি কৃষি উপকরণের মান নির্ধারণসহ নীতি প্রণয়ন সরকারকে পরামর্শ প্রদান করে চলেছে। 

বিএআরসি গত ১০ বছরে নোটিফাইড ৭টি ফসলের (ধান, গম, আলু, ইক্ষু, পাট, কেনাফ ও মেস্তা) ফলন ও মান নিশ্চিতপূর্বক বিভিন্ন কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক উদ্ভাবিত ১৭০টিরও বেশি জাত ছাড় করেছে। বিএআরসি ১৯৭৯ সাল থেকে সার সুপারিশমালা ‘হাতবই’ প্রণয়ন করে আসছে যা সার ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি কৃষি যান্ত্রিকীকরণ রোডম্যাপ ২০২১, ২০৩১ ও ২০৪১ প্রণয়ন করেছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এই প্রতিষ্ঠানটি দেশে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা তথা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে বিশেষ অবদান রেখে চলেছে। কৃষি খাত ৪র্থ শিল্প বিপ্লব প্রযুক্তি ব্যবহারের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।     কৃষিতে ভারী ধাতুর উপস্থিতি শনাক্তকরণ এবং শোধনসহ ন্যানো প্রযুক্তির সার, বালাইনাশক উদ্ভাবন ও ব্যবহারের মাধ্যমে উপকরণ দক্ষতা অর্জনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। পলিহাউজ, হাইটেক গ্রিনহাউজ ফার্মিং, বায়োফার্টিলাইজার, বায়োপেস্টিসাইড ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের ব্যবহার বৃদ্ধি কার্যক্রম চলমান আছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, খাদ্য ও পানির নিরাপত্তা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় তৈরি হওয়া শত বছরের বদ্বীপ পরিকল্পনা বা ডেল্টা প্লান ২১০০ এবং প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০৪১ তৈরি করেছে বাংলাদেশ সরকার। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে ফসলি জমিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি, বন্যা, খরা ইত্যাদি বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোদগের পরিমাণ প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই লবণাক্ততা, জলমগ্নতা, খরাসহিষ্ণু ফসলের নতুন নতুন জাত উদ্ধাবন এবং তা কৃষকের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল। ইতোমধ্যে লবণাক্তসহিষ্ণু ব্রি ধান-৬৭, বিনা ধান-১০, বারি ভুট্টা-১৬; জলমগ্নতাসহিষ্ণু বিনা ধান-১১; খরাসহিষ্ণু বিনাধান-১১ ইত্যাদির পাশাপাশি নতুন ধরনের উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবনের চেষ্টা চলমান রয়েছে। ভবিষ্যতের খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য সকল ধরনের পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সবাইকে সাথে নিয়ে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল ১০০ কৃষি প্রযুক্তি এটলাস, ১০০ ুবধৎং ড়ভ অমৎরপঁষঃঁৎধষ উবাবষড়ঢ়সবহঃ রহ ইধহমষধফবংয, কৃষি গবেষণা অগ্রাধিকার দলিল, ক্রপ জোনিং ম্যাপ, সার সুপারিশমালা হাতবই ২০১৮, কৃষি প্রযুক্তি হাত বই প্রকাশ করেছে। এসকল কাজ কৃষক এবং কৃষির সাথে সম্পৃৃক্ত সকলকে উপকৃত করেছে এবং প্রশংসিত হয়েছে। কৃষিক্ষেত্রে বিভিন্ন সাফল্যের ফলস্বরূপ ২০২১ সালে গবেষণা ও প্রশিক্ষণে বিশেষ অবদানের জন্য দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হয় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল।

দেশের চাহিদাভিত্তিক গবেষণা কর্মসূচি বাস্তবায়ন, প্রয়োজনীয় গবেষণা যন্ত্রপাতি ক্রয়, অবকাঠামো ও মানবসম্পদ উন্নয়ন ইত্যাদি কাউন্সিলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত আছে। ভবিষ্যৎ চাহিদার আলোকে গবেষণার ক্ষেত্র নির্ধারণে “ভিশন ডকুমেন্ট ২০৩০” ও বিজ্ঞানীদের দক্ষতা উন্নয়নে “মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিকল্পনা ২০২৫” ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন, পরিবেশবান্ধব গবেষণা কর্মসূচি যেমন সমন্বিত বালাইব্যবস্থাপনা ( আইপিএম) এবং এড়ড়ফ অমৎরপঁষঃঁৎধষ চৎধপঃরপব (এঅচ), ডেল্টা প্লান ২১০০ কে গুরুত্ব প্রদান, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সমস্যা মোকাবিলার জন্য উপযোগী জাত উদ্ভাবনে উদ্যোগ নেয়া, ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে হাইব্রিড জাত ও উন্নত জাত উদ্ধাবন করার পাশাপাশি উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ধাবনে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান, জীব নিরাপত্তা (ইরড়ংধভবঃু) সুসংহত করার লক্ষ্যে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নীতি/আইনের সাথে সামঞ্জস্য বিধান, বর্ধিত হারে প্রজনন বীজ (ইৎববফবৎ ঝববফ)/ ভিত্তিবীজ (ঋড়ঁহফধঃরড়হ ঝববফ) উৎপাদন এবং সাম্প্রতিক উদ্ভাবিত জাত ও প্রযুক্তি হস্তান্তরকে গুরুত্ব প্রদান করা হবে।
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সাথে তালমিলিয়ে দেশের খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য মানসম্মত কৃষি গবেষণার কোন বিকল্প নেই। কৃষি গবেষণাকে আরো যুগোপযোগী করে দেশের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় আরো বেশি সংবেদনশীল হওয়া প্রয়োজন। 

জাতীয় কৃষি নীতি ২০১৮ জাতির পিতার স্বপ্নের কৃষি নীতির প্রতিফলন। কৃষি মন্ত্রণালেয়ের উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সমন্বয়ে জাতীয় কৃষি নীতি ২০১৮ প্রণীত হয়েছে। এ নীতিতে কৃষিকে আরও আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত বিভিন্ন প্রযুক্তি সংযোজন করা হয়েছে। খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চত করার লক্ষ্যে কৃষি নীতিতে নতুন করে ন্যানো প্রযুক্তির মতো আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এ নীতিতে কৃষি খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনা, গবেষণা ও উন্নয়ন, কৃষি সম্প্রসারণ, কৃষিতে সমবায়, কৃষি বিপণন, বিশেষায়িত কৃষি যেমন- ছাদে কৃষি, হাইড্রোপোনিক, অ্যারোপোনিক, সংরক্ষণমূলক কৃষি, ভাসমান কৃষি, প্রিসিশন কৃষি ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ সংরক্ষণ, শস্য নিবিড়তা বৃদ্ধি এবং উৎপাদনশীল টেকসই কৃষি ব্যবস্থা প্রবর্তন কৃষি নীতিতে প্রতিফলিত হয়েছে। কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনে মেধা, দক্ষতা ও প্রজ্ঞার সমন্বয়ের উপরও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। পুষ্টিতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর ধারাবাহিক গবেষণার ফলে ধানসহ বিভিন্ন ফলদ ও শাকসবজির সব মওসুমে পুষ্টিসমৃদ্ধ জাত বের হয়েছে। কৃষিবিজ্ঞানীদের গবেষণার ফলে বর্তমানে সারা বছর বিভিন্ন শাকসবজি ও ফল-ফলাদির চাষ হচ্ছে যা দেশের সার্বিক পুষ্টি চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ উন্নয়নের পথে হাঁটছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন ও প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০৪১ বাস্তবায়নের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কর্ম পরিকল্পনা ও কৌশল অবলম্বন করেছে। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের মানুষের খাদ্য-পুষ্টি নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত হবে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাকে ২০৩০ সালের মধ্যে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে উন্নীত করার জন্য বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল অন্যান্য জাতীয় কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। 

লেখক : নির্বাহী চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, ফোন : ২২২২২৪২৬৬, ই-মেইল : cc-barc@barc.gov.bd


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon